মনসুর আলম , চকরিয়া :

চকরিয়া উপজেলার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হাসেরদীঘি ষ্টেশনে মোটর পার্টসের দোকানের আড়ালে জালাল উদ্দিন ও আবুল হাসেম নামের দুই ইয়াবা ব্যবসায়ী নির্ভিঘেœ চালিয়ে যাচ্ছে যুব সমাজ ধ্বংসকারী ইয়াবা ব্যবসা। কিন্তু সংশ্লিষ্ট পুলিশ প্রশাসনের ইয়াবা ব্যবসার এ বিষয়টি জেনেও তাদের গ্রেফতার না করে রহস্যজনক ভূমিকা পালন করছে বলে স্থানীয়দের অভিমত।

জানাগেছে, সরকারের ঘোষিত সিদ্ধান্তের আলোকে সারা দেশে এক যোগে মাদক বিরোধী অভিযানে নামে র‍্যাব, পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। ইতিমধ্যে সারা দেশে অন্তত দুই শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে। চকরিয়ার অন্যান্য মাদক ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি উল্লেখিত জালাল উদ্দিন ও আবুল হাসেমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে তথ্যবহুল ও বস্তুনিষ্ট সংবাদ পরিবেশন হয়ে আসছে। ফলে ইয়াবা কারবারি ও বিক্রেতারা গা ঢাকা দিয়েছে। ব্যবসায়ীরা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে চলে গেলেও চকরিয়া থানার অভিযানে খ্যাত-অখ্যাত অন্তত ২শতাধিক মাদক ব্যবসায়ী গ্রেফতার হয়েছে।

স্থানীয় নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানাগেছে, বন্দুকযুদ্ধে বরইতলীর শাহজাহান নিহত হলেও আন্ডারগ্রাউনে থাকা শীর্ষ ইয়াবা ব্যবসা ও মোটরসাইকেল চোরাকারবারী সিন্ডিকেটের অন্যতম সদস্য চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের দিগরপানখালী এলাকার মৃত শামসুল হুদার ছেলে ফাসিয়াখালী ইউনিয়ন শ্রমিকদলের সদস্য সচিব পদ থেকে বহিস্কৃত জালাল উদ্দিন ওরফে ইয়াবা জালাল এবং তার আপন বড়ভাই অবৈধ মাদকদ্রব্য মামলার (এফআইএর নং ৪/১৫) এজাহার নামীয় আসামী আবুল হাসেম (প্রকাশ টুটটেং হাসেম) পুলিশ ও লোকচক্ষুকে ফাঁকি দিয়ে এখনো ইয়াবা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। ইয়াবা ব্যবসায়ী ও মোটর সাইকেল চোরাকারবারী জালাল উদ্দিন ও তার ভাই হাসেমের ইয়াবা ব্যবসার মূল টার্নিং পয়েন্ট চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক সংলগ্ন উপজেলার ফাসিয়াখালী হাসেরদীঘি ষ্টেশনস্থ মেসার্স শাহ জালাল টায়ার হাউস প্রতিষ্ঠান। তারা প্রশাসন ও লোকচক্ষুকে ফাঁকি দিয়ে ওই পয়েন্ট থেকেই সকল ইয়াবা চালান বিভিন্ন কৌশলে সরবরাহ দিয়ে আসছে। দু’ভাইয়ের সিন্ডিকেট ইয়াবা বাণিজ্যে নিয়ে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে।

থানা সূত্রে জানায়, ইয়াবা ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিনের আপন বড় ভাই মৌলভী আবুল হাসেম ইয়াবা ট্যাবলেটের চালান নিয়ে ঢাকায় গেলে বিগত ২০১৫সনের ৬ সেপ্টেম্বর ডিএমপি’র (ঢাকা) শাহজাহানপুর থানা পুলিশ মাথার টুপির ভেতরে মোড়ানো ৪০০০ (চার হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ হাতে নাতে গ্রেফতার করে। ওই অভিযান নিয়ে শাহজাহানপুর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনের ১৯৯০ সনের ১৯(১)এর ৯ (খ) ধারায় মামলা হয় ইয়াবা ব্যবসায়ী ধৃত আবুল হাসেমের বিরুদ্ধে। ওই মামলায় দীর্ঘ ১৬ মাস কারাভোগ থাকার পর জামিনে বের হয়ে প্রশাসনের চোখকে ফাঁকি দিয়ে ছোট ভাই জালালের নিয়ন্ত্রিত ইয়াবা ব্যবসার ফের হাল ধরেন। এদিকে অবৈধ ইয়াবা ব্যবসা থেকে পারপেতে লক্ষ লক্ষ টাকার মিশনে নেমেছে ইয়াবা ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন ও তার ভাই মৌলভী আবুল হাসেম ওরফে টুটটেং হাসেম। ইতিপূর্বে তাদের অবৈধ ইয়াবা ব্যবসা নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় বস্তুনিষ্ট সংবাদ প্রকাশে ক্ষিপ্ত হয়ে চকরিয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি আবদুল মজিদসহ কর্মরত ৪ সাংবাদিদকে জড়িয়ে গত ৭জুন চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে একটি মিথ্যা ফৌজদারী অভিযোগ (নং সিআর ৬২১/১৮) দায়ের করেছেন। বিষয়টি তদন্তের জন্য সিআইডি পুলিশকে দায়িত্ব দিয়েছেন। এনিয়ে সচেতন মহলে ও সংবাদ মাধ্যমে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। প্রেস ক্লাব নেতৃবৃন্দ, কর্মরত সাংবাদিক ও সচেতন মহল চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন ও তার ভাই আবুল হাসেমকে অবিলম্বে গ্রেফতার দাবী করেন।

চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ীর পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ীর একটি তালিকা তৈরীর প্রক্রিয়া চলছে। অচিরেই তালিকাভুক্তসহ চিহ্নিত ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেপ্তার করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। ইতিপূর্বে প্রায় ২ শতাধিক ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।